হাওড়ের বাতিঘর ৭১
মিঠামইন অল ওয়েদার সড়কের জিরো পয়েন্টে তিনটি সড়কের মিলনস্থলে তৈরি হচ্ছে একটি সড়কদ্বীপ (হাওড়ের বাতিঘর ৭১) বা ব- দ্বীপ। ত্রিভুজ আকৃতির এই ব-দ্বীপ ক্রমশ উপরের দিকে ধাবিত হওয়া উন্নয়নের একটি শ্বাশত বাতিঘর হিসেবই মিঠামইনকে চিরদিন এগিয়ে নিয়ে যাবে এই প্রত্যাশা ।স্থাপনাটি ত্রিভুজ আকৃতির জন্য সড়কের যে কোনো দিক থেকেই তা দৃশ্যমান হবে। বিশাল জলরাশির অনেক দূর থেকে এটিকে দেখাও যাবে।
স্থাপনাটির তিনপাশে সড়কের মুখোমুখি বিগত দুই মেয়াদের বিশ্ব নন্দিত মাননীয় রাষ্ট্রপতি জনাব আবদুল হামিদ , মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা এবং জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এ তিন জনের ম্যুরাল থাকবে। রূপক অর্থে এ তিনজনই আমাদের বাতিঘর।স্থাপনাটির গাত্রে ঊর্ধ্বমুখী তীর চিহ্ন (হাওরের উন্নয়ন) এবং উপরে বৈদ্যুতিক অনির্বাণ আলোর বিচ্ছুরণ থাকবে। দিনে এবং রাতে দুই ধরণের পরিবেশের কথা ভেবে তৈরি করা হচ্ছে এই আলোর প্রভা।খুবই দৃষ্টিনন্দন হবে।
আমাদের এ হাওড় বাতিঘর ৭১ এর উচ্চতা সর্বসাকূল্যে ৭১ ফুট রাখা হয়েছে স্বাধীনতার বছর ১৯৭১সালের কথা স্মরণে আসার জন্যই।স্থাপনাটির চারদিকে ১০০ ফিট ব্যাসের একটি গোলাকার স্বল্প উচ্চতার পোড়ামাটির নক্সিফলক- খচিত দেয়াল,হবে মুজিব জন্ম শতবর্ষের স্মৃতি। মূল স্থাপনাটি ৫২ ফিটের সমকোণী ত্রিভুজ, যা আমাদের ভাষা আন্দোলনের বছরের(১৯৫২ সাল) প্রতীক হিসেবে স্মৃতি বহন করবে।হাওড়ের বাতিঘর ৭১ স্থাপনাটি ৭১ ফিট উচ্চতা অর্জন করেছে পর্যায়ক্রমিক ৪টি ধাপে।
১ম ধাপের উচ্চতা বেদীসহ ২১ ফিট- যা আমাদের ভাষা আন্দোলনের প্রেরণা থেকে উজ্জীবিত।ভাষা শহীদদের কথা স্মরণ করবে।২য় ধাপ ১ম ধাপ হতে ২৬ ফিট উচুতে– যা আমাদের স্বাধীনতা দিবসের প্রতীক বহন করবে। ৩ ধাপ ২য় ধাপ হতে ১৬ ফিট উচুতে– ১৬ ই ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসের দিক নির্দেশ করবে। ৪র্থ ধাপ ৩ ধাপ হতে ১১ ফিট উচ্চতা মুক্তিযুদ্ধের ১১ টি সেক্টরের প্রতীক যা বাংলাদেশকে মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্ব গাঁথা স্মৃতি বহন করবে। হাওড়ের বাতিঘর ৭১ এ ৩ দিক হতে সাতটি করে পর্যায়ক্রমিক বাতি প্রজ্বলিত থাকবে যা আমাদের ৭ বীরশ্রেষ্ঠ এর সাথে সকল মুক্তিযোদ্ধাদের ত্যাগের মহিমা প্রকাশ করবে।
নির্মাণাকারী সংস্থার এক দায়িত্বশীল কর্মকর্তার সাথে কথা বলে জানলাম আগামী মার্চ ২৪ এ এটি উদ্বোধন হতে পারে। কাজ প্রায় শেষ। উদ্বোধনের পর যে বা যারা যখনই অলওয়েদার সড়ক বা এই ‘হাওড় বাতিঘর-৭১’ পরিদর্শন করতে আসবেন বর্ণিত তথ্যগুলি মিলিয়ে নেবেন তাহলেই স্বাধীনতার স্বাদটা পুরোপুরি অনুভূত হবে এবং ভ্রমণ সার্থক হবে ।